শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ১২:২৮ পূর্বাহ্ন
আদালত প্রতিবেদক: অবিলম্বে দেশের সব অনলাইন প্লাটফর্ম থেকে টিকটক, বিগো লাইভ, পাবজি, ফ্রি ফায়ার গেম ও লাইকিসহ এ ধরনের সব অনলাইনভিত্তিক খেলা ও অ্যাপস অপসারণ এবং সব লিংক বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
একইসঙ্গে সব অনলাইন প্লাটফর্ম থেকে টিকটক, বিগো লাইভ, পাবজি, ফ্রি ফায়ার গেম তথা লাইকির মতো সব ধরনের অনলাইন গেম এবং অ্যাপস বন্ধের কেন নির্দেশ দেয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত।
আজ সোমবার (১৬ আগস্ট ) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চ এ বিষয়ে আদেশ দেন।
রিটকারী আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির পল্লব। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল গোলাম সরোয়ার পায়েল। আর বিটিআরসির পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ব্যারিস্টার খন্দকার রেজা-ই-রাকিব।
মানবাধিকার সংগঠন ‘ল অ্যান্ড লাইফ’ ফাউন্ডেশনের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের দুই আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির পল্লব ও ব্যারিস্টার মোহাম্মদ কাউছার গত ২৪ জুন হাইকোর্টে এ রিট আবেদন দাখিল করেন। এতে ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব, শিক্ষা সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, আইন সচিব, স্বাস্থ্য সচিব, বিটিআরসির চেয়ারম্যান, পুলিশ মহাপরিদর্শক(আইজি), বাংলাদেশ ব্যাংক, মোবাইল অপারেটর, বিকাশ ও নগদকে বিবাদী করা হয়। বিবাদীদের প্রতি আইনি নোটিশ দেওয়ার পরও কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় রিট আবেদন করা হয়।
রিট আবেদনে ওইসব অ্যাপস ও গেইমের আড়ালে শত শত কোটি অর্থ পাচার ও লেনদেনে জড়িতদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয়। পাশাপাশি ক্ষতিকর গেইমস ও অ্যাপস বন্ধে বিআরটিসিকে নিয়মিত সুপারিশ করতে প্রযুক্তিবিদ, শিক্ষাবিদ ও আইনজীবী সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠনের নির্দেশনা চাওয়া হয়।
রিট আবেদনে বলা হয়, পাবজি ও ফ্রি ফায়ারের মতো গেমস-এ বাংলাদেশের যুব সমাজ এবং শিশু-কিশোররা ব্যাপকভাবে আসক্ত হয়ে পড়েছে। এসব গেমস যুব সমাজকে সহিংসতা প্রশিক্ষণের এক কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠছে। ফলে সামাজিক মূল্যবোধ, শিক্ষা, সংস্কৃতি বিনষ্ট হচ্ছে। এছাড়া টিকটক, লাইকি অ্যাপস ব্যবহার করে দেশের শিশু কিশোর এবং যুব সমাজ বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হচ্ছে। সারা দেশে কিশোর গ্যাং কালচার তৈরি হচ্ছে। টিকটক অনুসারীরা বিভিন্ন গোপন জায়গায় পুল পার্টির নামে যৌন কার্যক্রমে লিপ্ত হচ্ছে। বাংলাদেশ থেকে দেশের বাহিরে নারী ও অর্থ পাচারের ঘটনায়ও টিকটক, লাইকি এবং বিগো লাইভ এর মাধ্যমে চলছে। যা দেশের এবং জনস্বার্থের পরিপন্থি।
রিট আবেদনে আরো বলা হয়, বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং তাৎপর্যপূর্ণ বিধায় এ বিষয়টি কঠোরভাবে মনিটর করা প্রয়োজন। অনৈতিক এসব গেমস থেকে রক্ষা করতে শিশুদের জন্য উপযোগী ও যথাযথ অনলাইন গেমস তৈরি করা অত্যন্ত জরুরি। ক্ষতিকর গেমস এবং অ্যাপস অনলাইন প্লাটফর্ম থেকে সরিয়ে বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য একটি স্বাস্থ্যকর এবং উপযোগী সাইবার পদ্ধতি সুনিশ্চিত করতে সরকারের একটি কমিটি থাকা প্রয়োজন।